মিসরে গোপনে গণহারে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।এমনকি আটক ব্যক্তিদের কোথায় রাখা হচ্ছে কিংবা তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে সে ধরণের কোনো তথ্য দিতে রাজি হচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
এইচআরডব্লিউর মধ্যপ্রাচ্যের উপপরিচালক জোই স্টর্ক জানান, ২০১৩ সালে মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুতির পর জেনারেল সিসির আওতায় নিরপত্তাবাহিনী প্রায় পুরোপুরি দায়মুক্তভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত কয়েক শতাধিক লোক নিহত হয়েছে এবং কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মী। তবে তাদের মধ্যে সেক্যুলার ও উদারপন্থী কর্মীও রয়েছে।
এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পাঁচ ব্যক্তিকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেছে। নিখোঁজের তিনটি ঘটনায় দেখা গেছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের সর্বশেষ রাষ্ট্রীয় কারাগারে দেখা গেছে। তবে এসব ব্যক্তি কোথায় রয়েছে প্রাথমিকভাবে কর্তৃপক্ষ তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। ইসরা আল তাওয়ায়িল ও তার দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই বন্ধুকে গত ১ জুন কায়রোর মাদি জেলায় নীল নদের তীর থেকে আটক করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বারবার তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। তবে পরবর্তী পৃথক কারাগারে স্বজনরা তাদের খোঁজ পেয়েছেন। ওই মাসেই আরও তিন ব্যক্তি নিখোঁজ হয়। কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যাপারেও কোন কিছু জানেনা বলে তখন জানিয়েছিল। এ ঘটনার তিন দিন পর তাদের লাশ পাওয়া গেছে।
এভাবে গোপনে আটক আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এ ধরনের আচরণকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবেও অভিহিত করেছে এইচআরডব্লিউ। অবিলম্বে আটকদের নাম-পরিচয় প্রকাশ এবং তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।